আল জাজিরার তথ্যচিত্র নিয়ে সরকারের কৌশল: অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ে শোরগোল বানিয়ে মানুষের মনোযোগ সরানোর চেষ্টা

আল জাজিরায় ‘অল দ্যা প্রাইম মিনিস্টারস মেন’ প্রচারের পর সরকার এবং এর সমর্থকগোষ্ঠীর প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করলে দেখা যায়, তারা বিভিন্ন অপ্রাসঙ্গিক বিষয়ের অবতারণা করে শোরগোল বানাচ্ছে। তারা ডকুমেন্টারিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা অভিযোগ আনছে এবং চরিত্রহননের চেষ্টা করছে। এছাড়া ১৯৭১, জামাত, ষড়যন্ত্র, এবং তারেক রহমান প্রসঙ্গ টেনে এনে এর সঙ্গে জুড়ে দেবার চেষ্টা করছে।

কিন্তু তথ্যচিত্রটিতে সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের বিরুদ্ধে গুরুতর যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, সে বিষয়ে একটি কথাও উচ্চারণ করেনি সরকার, সেনাবাহিনী এবং এদের মুখপাত্ররা। অভিযোগগুলো হচ্ছে:

• সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদের দুই ভাই হারিস আহমেদ এবং আনিস আহমেদ খুনের দায়ে দণ্ডিত পলাতক আসামি;

• হারিস বেনামে শিক্ষা ও জন্ম সনদ তৈরি করেছেন, সেগুলো দিয়ে নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট জোগাড় করেছেন। এরপর সেই মিথ্যা পরিচয়ের কাজগপত্র দিয়ে বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছেন এবং এসব করতে গিয়ে আরও অনেকগুলো নতুন অপরাধ করেছেন;

• আজিজ আহমেদ বিজিবি প্রধান থাকাকালীন ভাইয়ের এসব জালিয়াতির বিষয়ে সম্পূর্ণ ওয়াকিবহাল ছিলেন এবং জাল পাসপোর্ট দিয়ে ভাইকে হাঙ্গেরি যেতে সহায়তা দিয়েছেন। মিথ্যা পরিচয়পত্র এবং ব্যাংক স্টেটমেন্ট ব্যবহার করে সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করতেও সাহায্য করেছেন;

• এই কাজগুলো করার জন্য আজিজ বেশ কয়েকজন বিজিবি কর্মকর্তাকে কাজে লাগিয়েছেন। এসব কর্মকর্তা আজিজ আহমেদের ভাইয়ের জাল কাগজপত্রে সাক্ষর করে সেগুলো সত্যায়িত করে দিয়েছেন;

• আজিজ আহমেদ হাঙ্গেরিতে গিয়ে ভাই হারিসের সঙ্গে দেখা করেছেন এবং তাঁর ব্যবসা কেমন চলছে তা দেখে এসেছেন;

• সেনাপ্রধান আজিজ খুনের দায়ে দণ্ডিত তাঁর আরেক পলাতক ভাইয়ের সঙ্গেও মালয়েশিয়াতে গিয়ে দেখা করেছেন

এসব অভিযোগের পেছনে সরকারের নীরব সমর্থন আড়াল করতেই এখন তথ্যচিত্রটি নিয়ে সরকার ও এর সমর্থকেরা শোরগোল সৃষ্টি করছে। কারণ সরকার, সেনাবাহিনী, আজিজ এবং তাঁর ভাইদের কাছে অভিযোগগুলোর কোনো জবাব নেই। সরকার বিভিন্ন মিথ্যা অভিযোগ তুলে পানি ঘোলা করার চেষ্টা করছে যেন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো থেকে মানুষের দৃষ্টি সরে যায়।

//DB

আরো পড়ুন