একদফা আন্দোলন শুরুর দিন বেশি দূরে নয় :খায়রুল কবির খোকন

যায়যায়দিন : বিএনপি কেন আন্দোলনে সফল হতে পারছে না?

খোকন : দেশ গঠন এবং মানুষের শান্তি নিশ্চিত করতে একটি সরকারের অনেক কাজ থাকে; কিন্তু বর্তমান সরকারের কাজ দুটি- এক. লুটপাট করা, দুই. বিএনপিকে দমন। এ দুটি ক্ষেত্রেই সরকার সফল। সরকার জানে, বিএনপিকে যদি গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ে মাঠে থাকতে দেওয়া হয় তাহলে তাদের পতন শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। এজন্য তারা হামলা-মামলা করে বিএনপিকে মাঠে থাকতে দিচ্ছে না। এজন্য মনে হচ্ছে আন্দোলনে বিএনপি সফল নয়। আসলে এত প্রতিকূলতার মধ্যে বিএনপি যে মানুষের অধিকার ফেরানোর জন্য আন্দোলন করছে তাতে সফল নয়, তা পুরোপুরিভাবে বলা যাবে না।

যাযাদি : কার্যকর আন্দোলনের জন্য কবে নাগাদ বিএনপি মাঠে নামতে পারবে?

খোকন : দিন-তারিখ বলে আন্দোলন হলে তো জালিলের ট্রাম্প কার্ডও সফল হতো। আসলে দিন-তারিখ বলে কার্যকর আন্দোলন হবে না। আন্দোলন চলমান প্রক্রিয়া যেকোনো সময়ে হতে পারে। আর স্বল্প সময়ের মধ্যে এর ইতিবাচক ফলও আসতে পারে। বর্তমান ‘ভোটারবিহীন স্বৈরাচারী সরকারের’ বিরুদ্ধে দল-মত নির্বিশেষে প্রত্যেক দেশপ্রেমিক দল, গোষ্ঠী ও জনগণকে একটি পস্নাটফর্মে আনার চেষ্টা চলছে। এ প্রক্রিয়া অনেক দূর এগিয়েছে। পুরো প্রক্রিয়া দ্রম্নত শেষ হবে। আর তখনই শরু হবে সরকার পতনের একদফা আন্দোলন।

যাযাদি : বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে সাংগঠনিকভাবে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বলছে; কিন্তু হচ্ছে না, সংগঠনকে পুরোপুরিভাবে ঘুরে দাঁড়াতে কত সময় লাগতে পারে?

খোকন : সাংগঠনিক পুনর্গঠন চলমান প্রক্রিয়া। তা কখনো শেষ হওয়ার নয়। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্বে সংগঠন গোছানোর কাজ চলছে, চলবে।

যাযাদি : একের পর এক নির্বাচনে ভরাডুবির ফলে আবারও নির্বাচন বর্জনের জন্য তৃণমূলের কোনো চাপ আছে কি না?

খোকন : একটি আসনে বিএনপির কর্মী আছে হাজার হাজার। সেখানের নির্বাচনে বিএনপি ভোট পায় ৪০০ আর আওয়ামী লীগ ভোট পায় ১ লাখ ৮৮ হাজার। এমন ফল পাগলেও বিশ্বাস করবে না। এ ধরনের অনিয়মের নির্বাচনের পর তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মনে কষ্ট থাকাটা অস্বাভাবিক নয়। তারা রাগে-ক্ষোভে নির্বাচন বর্জনের কথা বলতেও পারে। তবে বিএনপি নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল। নির্বাচন বর্জনের কথা এখন আর ভাবে না। শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন আদায়ের কথা ভাবে।

যাযাদি : সব নির্বাচনের বিষয়ে অনিয়মের অভিযোগ আনছেন, এমন নির্বাচনে গিয়ে দলের কী লাভ হচ্ছে?

খোকন : অনেক লাভ হচ্ছে। এদেশে যে দলীয় সরকারের অধীনে একটি নির্বাচনও সুষ্ঠু হতে পারে না, তা বারবার প্রমাণিত হচ্ছে। সব কিছুরই একটা শেষ আছে। এই অনিয়মেরও শেষ হবে। নিজের অধিকার আদায়ের জন্য জনগণ রাজপথে নেমে আসবে। তখন নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে ক্ষমতাসীনরা বাধ্য হবে।

যাযাদি : খালেদা জিয়া-তারেক রহমানের মতের অমিল বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর আসছে, এর কোনো ভিত্তি আছে কি না?

খোকন : এটা একেবারেই ভিত্তিহীন তথ্য। তাদের মধ্যে খুবই চমৎকার সম্পর্ক। তারেক রহমান মায়ের সঙ্গে কথা বলেই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন।

যাযাদি : সর্বশেষ ঢাকা-১৮ নির্বাচনকে ঘিরে বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় বিএনপি নেতা নিতাই রায়ের ফোনালাপ ফাঁস হয়েছে এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?

খোকন : বিএনপি জ্বালাও-পোড়াওয়ে বিশ্বাস করে না। ফাঁস হওয়া ফোনালাপও সঠিক বলে মনে হয় না। এটা সরকারের কোন সংস্থার কাজ হতে পারে।

সময় দেওয়ার জন্য যায়যায়দিনের পক্ষে ধন্যবাদ জানালে এর জবাবে খায়রুল কবির খোকনও যায়যায়দিন পরিবার এবং অগণিত পাঠককে ধন্যবাদ জানান।

আরো পড়ুন