দশ হাজার টাকা না দিতে পারায় পুলিশ নির্যাতন করে হত্যা।

রায়হানের মা সালমা বেগম ও চাচা হাবিবুল্লাহ অভিযোগ করে যুগান্তরকে জানান, কর্মস্থল চিকিৎসকের চেম্বার থেকে ফিরতে দেরি দেখে শনিবার রাত ১০টায় রায়হানের মোবাইলে ফোন দেন মা ও স্ত্রী। কিন্তু ফোন বন্ধ পান। ভোর ৪টা ২৩ মিনিটের দিকে মায়ের মোবাইল ফোনে অপরিচিত একটি নম্বর থেকে কল দিয়ে রায়হান জানায় পুলিশ তাকে ধরে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে নিয়ে এসেছে। এখন তার কাছে ১০ হাজার টাকা ঘুষ চাচ্ছে। টাকা দিলে পুলিশ তাকে ছেড়ে দেবে। এ সময় কেঁদে কেঁদে রায়হান তাকে বাঁচানোর আকুতি জানায়।
যুগান্তরের অনুসন্ধানে পাওয়া যায়, ওই মোবাইল নম্বরটি বন্দর ফাঁড়ির কনস্টেবল তৌহিদের। এদিকে ছেলেকে পুলিশে ধরেছে শুনে রায়হানের মা তার চাচাকে ৫ হাজার টাকা দিয়ে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পাঠান। রায়হানের চাচা হাবিবুল্লাহ রোববার ফজরের সময় টাকা নিয়ে ভাতিজা রায়হানকে ছাড়িয়ে আনতে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে যান।
এ সময় সাদা পোশাকে ফাঁড়িতে থাকা এক পুলিশ সদস্য হাবিবুল্লাহকে বলেন, আপনার ১০ হাজার টাকা নিয়ে আসার কথা। আপনি ৫ হাজার টাকা নিয়ে আসলেন কেন? চলে যান, রায়হান এখন ঘুমাচ্ছে এবং যে পুলিশ কর্মকর্তা তাকে ধরে নিয়ে এসেছেন তিনিও ফাঁড়িতে নেই। আপনি ১০ হাজার টাকা নিয়ে সকাল ৯টার দিকে আসেন। আসলেই তাকে নিয়ে যেতে পারবেন। তাকে আমরা কোর্টে চালান করব না।
রায়হানের চাচা বাসায় চলে যান এবং পরে সকাল পৌনে ১০টায় দিকে টাকা নিয়ে ফের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যান। এ সময় পুলিশ সদস্যরা তার চাচাকে জানান, অসুস্থ হয়ে পড়ায় সকাল ৭টার দিকে রায়হানকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
এ খবরে হাবিবুল্লাহ উদ্বিগ্ন হয়ে তৎক্ষণাৎ ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যান। সেখানে গিয়ে জানতে পারেন রায়হানের লাশ মর্গে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর বিকাল ৩টার দিকে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। রায়হানের লাশ দাফন করে তিন পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করবেন বলে জানান চাচা হাবিবুল্লাহ।
আরো পড়ুন