‘দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ’

মিডনাইট সরকারের মাফিয়াতন্ত্র দেশে-বিদেশে উন্মোচিত হয়ে যাওয়ার পর তারা ঘরে-বাইরে মুখ দেখাতে না পেরে নতুন চক্রান্তে মেতে উঠেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, এখন সরকারের অবস্থা ‘দুলিতেছে তরী, ফুলিতেছে জল, ভুলিতেছে মাঝি পথ।’

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন রিজভী।

তিনি বলেন, চারদিকে নানা কথাবার্তা, ফিসফাস শুনতে পাচ্ছে জনগণ। সরকারের অবস্থা ভালো না। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে নানা নাটক, রঙ্গ করছে। আবার নতুন করে গ্রেফতার, মামলা, হামলা, নিপীড়ন, নিষ্ঠুর দমননীতি শুরু করেছে। জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে নতুন নতুন ইস্যু তৈরি করছে। এর অংশ হিসেবে গত ৪ ফেব্রুয়ারি নড়াইলের এক আদালত একটি মিথ্যা ও ভুয়া মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানকে দুই বছরের কারাদণ্ড দেয়। এর পর আমাদের মহান স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম ব্রিগেড ফোর্সের অধিনায়ক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অর্জিত বীরত্বসূচক ‘বীর উত্তম’ পদক ছিনতাই করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে সরকার। কোনটাতেই হালে পানি না পেয়ে হতাশ শেখ হাসিনা।

খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোনায়া জারি হওয়ার নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, বুধবার সরকারের বন্য আক্রোশের কারসাজিতে জাতীয়তাবাদী শক্তির ঐক্যের প্রতীক দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মানহানির মিথ্যা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। দেশনেত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ঘটনার মধ্য দিয়ে বর্তমান বিনাভোটের প্রধানমন্ত্রী তার জিঘাংসা পূরণের মুখোশ আরও একবার উন্মোচিত করল।

তিনি বলেন, এই সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে এ ধরনের বিকারগ্রস্ত লোকেরা প্রায়ই বিএনপি চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের নামে উদ্ভট, বানোয়াট ও আজগুবি মামলা একের পর এক দায়ের করে যাচ্ছে। মিথ্যা-ভুয়া মামলা দিয়ে হয়রানি করার উদ্দেশ্য হলো– সরকারের নেক নজরে থেকে আখের গুছিয়ে নেওয়া। সরকারি পেইড মামলাবাজদের অন্যতম একজন পত্রিকায় সাক্ষাৎকারে বলেছে, মামলা করাই আমার নেশা ও পেশা। প্রধানমন্ত্রীর আনুকুল্য পেতেই এ চেষ্টা।

রিজভী বলেন, আমাদের দলের ভাইস চেয়ারম্যান রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমদ বীর বিক্রম বলেছেন, ‘৭১-এ যুদ্ধকালে মুক্তিযোদ্ধার মোট সংখ্যা ছিল ৮০ হাজার। এখন কীভাবে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মুক্তিযোদ্ধা আড়াই লাখ হলো? এই ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা কারা? এটা জাতি জানতে চায়।

তিনি বলেন, আল জাজিরার পর ডয়েচে ভেলে এরপর আবার ‘দ্য ইকোনমিষ্ট’! রাষ্ট্রের সব গোপন অপকর্ম রাষ্ট্র হয়ে যাচ্ছে। বিদেশি গণমাধ্যমে বাংলাদেশ আজ আর কোনো রাষ্ট্র নয়, প্রজাতন্ত্র নয়, বৈদেশিক শক্তিনির্ভর এক মাফিয়াতন্ত্র মাত্র। অধঃপতিত এই পদ্ধতিতে নীতি, আদর্শ, প্রজ্ঞা বা দূরদর্শিতা নয়, বরং প্রতিহিংসাপরায়ণতা, হঠকারিতা ও অবিমৃষ্যকারিতাই এখন এই সরকারের চলার পথ প্রদর্শক।

আরো পড়ুন