মসজিদে বিস্ফোরণ : শঙ্কামুক্ত নন কেউই, প্রয়োজন প্রচুর রক্ত

গ্যাসের লিকেজ থেকে নারায়ণগঞ্জে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে। এদের মধ্যে একজন শিশুও রয়েছে। শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে যারা চিকিৎসাধীন রয়েছেন তাদের কেউ শঙ্কামুক্ত নন বলে জানিয়েছেন ইনস্টিটিউটের প্রধান সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন।

তিনি সকাল ৯টার দিকে বলেন ‘বিস্ফোরণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১১ জন মারা গেছেন। আমাদের কাছে মোট ৩৭ জন রোগী এসেছিল। বাকি যারা ভর্তি আছেন, তাদের অবস্থাও শঙ্কামুক্ত নয়।’

এসময় তিনি আরো জানান, সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফোন দিয়ে দগ্ধদের সর্বোচ্চ চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

জানা গেছে, দগ্ধ অবস্থায় চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের শরীরের ৮০ ভাগ থেকে শতভাগ পুড়ে গেছে। ফলে তাদের কেউই আশঙ্কামুক্ত নন।

এদিকে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিদের জন্য প্রচুর রক্তের প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক ডা. হুসেইন ইমাম।

তিনি বলেন, ‘আহতদের জন্য প্রচুর রক্তের প্রয়োজন। যারা রক্ত দিতে ইচ্চুক তাদের রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির সঙ্গে যোগাযোগ করতে অনুরোধ করা হচ্ছে।’

তিনি আরো জানান, জানান, সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের জন্য একটা ডেডিকেটেড ওয়ার্ড করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পরিদর্শন করেছেন।

তিনি বলেন, ‘সরকারি ব্যবস্থাপনায় সবারই চিকিৎসা চলবে। তবে কেউ শঙ্কামুক্ত নন।’

এদিকে এ ঘটনায় দগ্ধ রাশেদ (৩৪) নামে দগ্ধ আরেকজন মারা গেছেন বলে বেলা ১১টার দিকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল পুলিশ ক্যাম্পের পরিদর্শক মো. বাচ্চু মিয়া। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২ জনে দাঁড়িয়েছে।

নিহতরা হলেন— মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৫), সাব্বির (২২), জুয়েল (১৮), জামাল (৪০), জুবায়ের (৭), হুমায়ন কবির (৭০), মোস্তফা কামাল (৩৪), ইব্রাহিম (৪৩), রিফাত (১৮), জুনায়েদ (১৭) ও কুদ্দুস বেপারী (৭০)।

গতকাল ৪ সেপ্টেম্বর, শুক্রবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে এশার নামাজ আদায়ের সময় নারায়ণগঞ্জ শহরের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। মুহূর্তের মধ্যেই মসজিদের চারপাশে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। এ দুর্ঘটনায় মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিনসহ অর্ধশতাধিক মুসুল্লি দগ্ধ হন।

বিস্ফোরণে মসজিদের ছয়টি এসি পুড়ে যায়। উড়ে গেছে জানালার কাচও। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আধা ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

দগ্ধ ব্যক্তিদের মধ্যে ৩৭ জনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানকার শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাদের মধ্যে ১২ জন মারা গেলেন।

আরো পড়ুন