সরকার নিজেরাই ক্ষমতা খর্ব করছে: বিএনপি

বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেয়ার ক্ষেত্রে সরকার নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতার খর্ব করছে বলে দাবি করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রোববার দুপুরে ভার্চুয়াল এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এই দাবি করেন তিনি। গতকাল শনিবার দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠকে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো জানাতে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বিএনপি।
খালেদা জিয়ার মামলা তো এখন উচ্চ আদালতে চলমান আছে, তিনি এখন তার মামলা থেকে জামিন বা সাজা থেকে রেহায়ও চাচ্ছেন না। তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা অনুযায়ী সরকারের যে ক্ষমতা, সেটা অনুযায়ী তাকে বিদেশে পাঠাতে গিয়ে কি নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করছে- সাংবাদিকদের এমন  প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, হ্যাঁ এই কথাটা আমরা এর আগেও বলেছি। আমাদের আইনজীবীরাও এর উত্তর দিয়েছে। সরকার যে আইনের ক্ষমতাবলে এই নির্দেশ (খালেদা জিয়া মুক্তি দিয়েছে) দিয়েছেন, সেই আইনে তারা নতুন নির্দেশে দিয়ে তার (খালেদা জিয়া) বিদেশের চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারেন। আপনি সঠিক বলেছেন। তারা আসলে নিজেরাই নিজেদের ক্ষমতা খর্ব করছেন। এটার একমাত্র উদ্দেশ্য খালেদা জিয়ার সঙ্গে একটা বৈরী মনোভাব প্রদর্শন করা।

প্রতিহিংসামূলকভাবে তারা (সরকার) এই ব্যবস্থা করছে।
খালেদা জিয়ার বর্তমান শারীরিক অবস্থার প্রেক্ষিতে কোনও অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটলে তার দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণ সরকারকে বহন করতে হবে বলে উল্লেখ করেন বিএনপির মহাসচিব।

মির্জা ফখরুল বলেন, স্থায়ী কমিটির সভায় দেশনেত্রীর বিদেশে চিকিৎসা প্রসঙ্গে আইনমন্ত্রীর ঔদ্ধত্যপূর্ণ শালীনতা বিবর্জিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ জানানো হয়।
তিনি আরও বলেন, দেশনেত্রী পরিবারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তার বাসভবনে সাময়িকভাবে স্থানান্তরের যে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তা প্রশাসনিক নির্দেশ। আইনের কোথাও এ কথা বলা নেই যে সরকার তাকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে যেতে দিতে পারবেন না। যেখানে খুনের মামলায়, ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত আসামি অথবা আজীবন মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি মুক্তি নিয়ে বিদেশে চলে যেতে পারে সেখানে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে মানবিক কারণে চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া যাবে না এটা কোন মতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না।

সংসদে খালেদা জিয়া ও বিএনপিকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, গতকাল সংসদে সংসদ নেতা হিসাবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। তাঁর মনগড়া কল্প-কাহিনীর মধ্যে দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রীকে হেয়প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন। সভা এই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানায়। সভা মনে করে সংসদ নেতা ও আইনমন্ত্রীর এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজির স্থাপন করছে।
নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে এসে একজন মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থার উদ্যোগ সরকার গ্রহণ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন মির্জা ফখরুল।
করোনা মোকাবিলায় প্রায় ১৫ মাস সময় নিয়েও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, এ বিষয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির জ্যেষ্ঠ সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং করোনা চিকিৎসা ও টিকা কমিটির আহ্বায়ক ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন আগামী ৫ই জুলাই বিস্তারিত বক্তব্য রাখবেন।

আপনার মতামত দিন

আরো পড়ুন