সুনামগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য মানিকের নাম প্যানেল স্পিকার এর তালিকায়

সুনামগঞ্জ ৫ আসনের সংসদ সদস্য মানিক অরূপে বোমা মানিকের নাম মহান জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকার এর তালিকায়

জাতীয় সংসদের একটি বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে বোমা মানিকের নাম মহান জাতীয় সংসদের স্পিকার প্যানেলে প্রস্তাব করা হয়েছে।
এই কথা জানা জানি হওয়ার পর জাতীয় সংসদের সদস্যদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যদিও বেপারটি প্রাথমিক পর্যায়ে থাকায় এই ব্যাপারে কেও এখনো মুখ খুলতে চাচ্ছে না।

মানিক নিয়ে প্রশ্ন করা হলে একজন প্রভাব শালী নাম প্রকাশ না করার স্বার্থে আমাদের প্রতিবেদক কে বলেন –
১৫ মার্চ ১৯৯৯ আওয়ামী নেতা সুনামগঞ্জ-৫ আসন থেকে নির্বাচিত এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ছাতকের মণ্ডলীভোগের ২০০ উদয়াচল আবাসিক এলাকার বাসায় বোমা বিস্ফোরণ ঘটেছিল। এই বিস্ফোরণে তাৎক্ষনিকভাবে মারা যায় সিলেটের যুবলীগ কর্মী আরিফ হায়দার ও আবুল কালাম আজাদ। মানিকের মামাতো ভাই আবুল লেইছ গুরুতর আহত হয়।

সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল মানিকের বাসভবন অনুসন্ধান শেষে বোমা তৈরীর সময় বিস্ফোরণ ঘটেছে বলে উল্লেখ করে রিপোর্ট দেয়। এ রিপোর্টের পরপরই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার প্রেক্ষিতে ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুস সালাম বাদী হয়ে ২৬ মার্চ বিস্ফোরক দ্রব্য আইনের ৩, ৪ ও ৬ ধারায় একটি মামলা করেন। মামলা নম্বর ১১। পুলিশ চাইলে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল (এ সময় বিশেষজ্ঞ দল প্রশিক্ষণে বাইরে থাকায়) তখন অনুসন্ধানে আসতে পারেনি। ফলে ১৬ মার্চ পুলিশ লাশ দুটো উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। এ সময় পুলিশ বেশ কিছু বোমা তৈরীর উপকরণ উদ্ধার করে এবং বিস্ফোরণস্থল বাসার দোতলা সীল করে দেয়। ২৩ মার্চ সেনাবাহিনীর বিশেষজ্ঞ দল ছাতক যায় এবং ২৪ তারিখ পর্যন্ত তাদের অনুসন্ধান চালায়। ৯ সদস্যের এ বিশেষজ্ঞ দলের নেতৃত্ব দেন মেজর মোহাইমিন। অনুসন্ধানকালে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বেশ কিছু বিস্ফোরক দ্রব্য উদ্ধার করে বাইরে নিয়ে বিস্ফোরণ ঘটায়। এছাড়া বিনষ্ট বোমা তৈরীর উপকরণ ও তিনটি কিরিচ উদ্ধার করে। বিশেষজ্ঞ দল ২৪ তারিখই ফিরে যায়। সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল ফিরে গিয়েই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট প্রদান করে। রিপোর্টের বিষয়বস্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং পুলিশ সদর দপ্তরকেও অবহিত করা হয়। বোমা বিস্ফোরণ ঘটনায় দায়ের করা মামলার এজাহারে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয় যে, ‘ ১৬ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ ঘটনাস্থল থেকে প্রাপ্ত ও জব্ধকৃত আলামত, ঘটনাস্থলের পারিপার্শ্বিক অবস্থা, নিহত ২ জনের এবং জখমীদের দেহের জখমী স্থানের বিবরণ ও ঘটনার সময় ইত্যাদির প্রেক্ষিতে প্রতীয়মান হয় যে, ঘটনাস্থলে বিস্ফোরক দ্রব্য সংরক্ষণ করে ককটেল প্রস্তুতকালে এ ঘটনা ঘটেছে।

২৯ জুলাই মানিকের বাসায় বোমা বিস্ফোরণে হতাহতের মামলায় সিআইডি মানিকসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে চার্জশীট প্রদান করে।

ঘটনার পৌর কমিশনার জগদীশকে চার্জশীট থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। সিআইডি’র কুমিল্লা অঞ্চলের এএসপি ও এসআই মামলার তদন্তকারী অফিসার আমিনুল ইসলাম সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে এই চার্জশীট দাখিল করেন। এই মামলার চার্জশীট ভূক্ত আসামীরা সবাই মানিকের নিকটাত্মীয়। এরা হচ্ছে মামাতো ভাই আবুল লেইছ চৌধুরী, মানিকের দূর সম্পর্কের ফুফাতো ভাই বিপ্লব, বেল্লা ও গোপাল। এই ঘটনার ৩০টি আলামত জব্ধ করা হয়। এই মামলায় বাদীসহ ৪১ জন সাক্ষী রয়েছে

সিআইডি তদন্তে প্রমাণিত হয়, বাসায় বোমা তৈরীর বিষয়টি মানিক জানতেন এবং তাতে তার প্রত্যক্ষ মদদ ছিল। এছাড়া বোমা বিস্ফোরণে নিহত আরিফ হায়দারকে মানিক চিনেন না বলে মন্তব্য করলেও তার সঙ্গে যে আরিফের সুসম্পর্ক ছিল এবং তার বাসায় নিয়মিত যাতায়াত করতো তাও তদন্তে প্রমাণিত হয়

আদালতে দোষী সাবশঃত হলে বিজ্ঞ আদালত মানিককে ১০ বছরের করা দন্ড দেয় আর উচ্ছ আদালত ও একই সাজা বহাল রাখে এবং মানিক ১০ বছর জেল খাটেন

এমন অবস্থায় মানিকের মতো একজন বিতর্কিত ব্যক্তি যদি মহান জাতীয় সংসদের প্যানেল স্পিকার নির্বাচিত হন তাহলে সংসদের ভাব মূর্তি প্রশ্নের সমুখীন হবে বলে সংলিষ্টররা মনে করেন

আরো পড়ুন